দেশের কোটি কোটি মানুষ যখন অতীষ্ঠ ঠিক তখনি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের
সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের
কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ডইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ছাত্র তরুণ বিজ্ঞানী
মোঃ সাইফুল ইসলাম মাহফুজের নেতৃত্বে উক্ত অনুষদের ৮ম সেমিস্টারের
শিক্ষার্থীরা এই ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের যন্ত্রনা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তৈরি
করেছে অবিশ্বাস্য "পকেট সুইচ"। তাদের এ উদ্ভাবনে আমাদের ব্যবহারিত পকেটের
মোবাইল ফোনটিই হতে পারে সুইচ। উইন্ডোজ সাপোর্টেড মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই
নিয়ন্ত্রন করা যাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসের হলের,
একাডেমিক ভবন, বাসার/অফিসের যে কোন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি। ফলে ভয়াবহ
দুর্ঘটনা এর মাধ্যমে এড়ানো সম্ভব। এমনকি কোন লাইট অথবা ফ্যান অপ্রয়োজনে
চলছে কিনা তাও জানা যাবে এর মাধ্যমে। এটি একটি সফটওয়্যার ভিত্তিক
প্রজেক্ট। যা তৈরি করেছেন পবিপ্রবির 'টিম জিরো আওয়ার'। উইন্ডোজ সাপোর্টেড
মোবাইল ফোনে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করার বিষয়ে টিমের দলনেতা মাহফুজ বলেন
লোডশেডিং থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই আমরা এই প্রোজেক্টটি তৈরি করেছি। আমরা
চাই বিদ্যুতের অপচয় রোধ হোক। এই প্রচেষ্ঠা বর্তমান সরকার ঘোষিত ভিষন
২০২১- অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা দৃঢ় আশাবাদি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রজেক্টটি দূর-নিয়ন্ত্রিত অগ্নি নির্বাপন
যন্ত্রেও ব্যবহার করা যাবে। মাহফুজ, রাজধানি ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বসুন্ধরা
সিটির অগ্নিকান্ডের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন সেই অগ্নিকান্ডে মার্কেটটির
অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা থাকার পরও তা ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের শিকার হয়। যদি
দূর-নিয়ন্ত্রিত অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ থাকত, তবে
অগ্নিকান্ডের মাত্রা এতটা ভয়াবহ হতোনা। সেটিসহ আরো দেশ বিেিদশের বিভিন্ন
অগ্নিকান্ডের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা ভেবে আমরা এই "পকেট সুইচ" তৈরির জন্য
গবেষণা শুরু করি। এটি তৈরিতে মাত্র ২০০ টাকারও কম খরচ হবে। পকেট সুইচের
প্রযুক্তিগত দিকটি সম্পর্কে টিমের সদস্যরা জানান এটি উইন্ডোজ মোবাইল
ফোনের জন্য তৈরি একটি অ্যাপি¬কেশন। এর মাধ্যমে ওয়েভ সার্ভিস ও এফ এম
সিস্টেম ব্যবহার করে একসঙ্গে অনেক ডিভাইসকে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। তারা
আরো বলেন, আমাদের টিমের সদস্যদের সমন্বিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে এ পর্যন্ত
যতটুকু প্রাপ্তি তার পরিপূর্ণতা আসবে যদি আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার
সুফল বাংলার মানুষদের মাঝে পৌছে দিতে পারি।এর মাধ্যমেই আমরা স্বপ্ন দেখি
সুখী, সমৃদ্ধশালী, আলোকিত ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। উলে¬খ্য,
তুমুল প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ মাইক্রোসফট 'ইমাজিন কাপ-২০১২'-এ অংশগ্রহণ করে
এই শক্তিশালী দলটিবাংলাদেশের ৩০০টিরও বেশি দলের মধ্যে প্রতিযোগীতায়
শ্রেষ্ঠ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। তাদের এ সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন,
রেজিস্ট্রার মোঃ নওয়াব আলী খান এবং পবিপ্রবি জনসংযোগ বিভাগ। এক শুভেচ্ছা
বার্তায় ভিসি এবং রেজিস্ট্রার বলেন, লোডশেডিং থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য
এবং বৈদ্যতিক অগ্নিকান্ডে অগ্নিনির্বাপনেরজন্য এটি আমাদের দেশের জন্য
একটি বড় সাফল্য।তারা পবিপ্রবি'র তরুণ বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন
সফটওয়্যার আবিস্কার/উদ্ভাবন করে দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে
আশা প্রকাশ করেন। তারা এরকম উদ্যমী, চৌকস তরুণ বিজ্ঞানীদের
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করার আশ্বাস দেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন